৭ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ মঙ্গলবার | রাত ১:৪৭ মিনিট ঋতু : গ্রীষ্মকাল | ২০শে মে, ২০২৪ ইং
স্যালুট, কোমল মতি ছাত্র/ছাত্রীদের
এ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার
বিস্মিল্লাহির রাহ্মানির রাহিম। স্যালুট জানাই কোমল মতি ছাত্র/ছাত্রীদের যারা সড়ক দূর্ঘটনা রোধে গণপরিবহণ ড্রাইভারদের উদ্দ্যাত্বতা প্রতিরোধ, আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর ঘুষের রাজত্বের কারণে যানবাহন চলাচলে বিশৃঙ্খলারোধ যুগান্তকারী পদক্ষেপ নিয়েছে, যা নিতে পারে নাই সরকার বা দেশের স্বনামধন্য বুদ্দিজীবি সমাজ। সরকারের পক্ষে যে মন্ত্রীর সড়ক সচল রাখার দায়িত্ব, তার সমস্ত সময় ব্যায় হয় বিএনপি বিরোধী বকবকানীতে। বিভিন্ন কারণে তো বটেই, তাছাড়া পরিবহণ মালিক/শ্রমিক নেতারা সব সময়ই সরকারী দল, ফলে যাত্রী ও জনগণের উপর ষ্টীম রোলার চালাতে তারা সুবিধাজনক অবস্থায় রয়েছে, সরকারের মন্ত্রী (শাজাহান খান), প্রতিমন্ত্রী (মশিউর রহমান রাঙ্গা) পরিবহণ শ্রমিক ও মালিকদের নেতৃত্বে রয়েছেন, বিএনপি আমলে অগ্রভাগে ছিলেন গোলাম সিরাজ (বগুড়া) যাকে এখন বিএনপি’তে দেখা যায় না বরং সংস্কারবাদী হয়ে বিএনপি থেকে বিচ্ছিন্ন রয়েছেন। পরিবহণ মালিকরা যাত্রীদের শোষন করে, শ্রমিকদের শোষন করে। কৌশলে মালিক নেতারাই শ্রমিকদের নেতা থেকে যায়, যার ফলে এখন পর্যন্ত শ্রমিকদের মুঞ্জরী সম্পর্কে কোন স্থায়ী বেতন কাঠামো প্রনয়ন তো দূরের কথা, মোটিভেশন সম্পর্কেও তাদের কোন ট্রেনিং দেয়া হয় না। যাত্রীদের সাথে কি ধরনের ব্যবহার করতে হবে, যাত্রীদের জীবন রক্ষার্থে একজন ড্রাইভারের কতটুকু দায়িত্ব জ্ঞান থাকা দরকার সে সম্পর্কে উদ্ধুদ্দ করা হয় না, বরং কি ভাবে একে অপরের সাথে কমপিটিশন করে, একে অপরকে ওভারটেক করে কি ভাবে রাস্তা থেকে বেশী যাত্রী তোলা যায় সে দিকেই পরিবহণ মালিকদের নজর বেশী। আর্ন্তজাতিক শ্রম আইনের ৮ ঘন্টার বেশী একাধারে কাজ করার বিধান নাই, কিন্তু দূর পাল্লার পরিবহণের শ্রমিকদের ঘন্টার পর ঘন্টা ষ্ট্যায়ারিং (চালকের সীটে) বসে থাকতে হয়। যে দিন বাস নিয়ে দূর পাল্লার যাত্রা করে পরের দিনই একই ড্রাইভার ফিরে আসতে হয়, এতে ড্রাইভারের শারিরীক স্টেমিনার বিষয়টি বিবেচনায় আনা হয় না।
দূর্ঘটনার অন্যতম কারণ যানবাহনের যান্ত্রিক ক্রটি। প্রতি বৎসর এ যান্ত্রিক ক্রটি পরীক্ষা করার আইনগত দায়িত্ব বাংলাদেশ সড়ক পরিবহণ কর্তৃপক্ষের যা বিআরটিএ নামে পরিচিত। প্রতি জেলায় তাদের অফিস সহ জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে একটি কমিটি রয়েছে যাদের দায়িত্ব যানবাহনের যান্ত্রিক ক্রটি পরীক্ষা করত: ফিটনেস সার্টিফিকেট দেয়া। কিন্তু বিআরটিএ’র দূর্নীতি গ্রস্থ কর্মকর্তা/কর্মচারীরা ঘুষের বিনিময়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা ছাড়াই ফিটনেস সার্টিফিকেট ইস্যু করে। বাংলাদেশে অনেক সেক্টরই অসস্থিতর অবস্থায় রয়েছে। কিন্তু পরিবহণ সেক্টরে বিশৃঙ্খলার কারণে মৃত্যুর মিছিল দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হচ্ছে। এ বিশৃঙ্খলার জন্য মূলত: দায়ী পুলিশ বিভাগ। তারা এ সেক্টর থেকে নিয়মিত মাসোহারা পায়, ফলে পরিবহণ মালিক শ্রমিকদের দৌরাত্ব দিন দিন বেড়েই চলেছে, এমতাবস্থায়, কোমলমতি ছাত্র/ছাত্রীরা যে ভূমিকা রাখছে এ জন্য তাদের স্যালুট জানাই, এ অবস্থা অব্যাহত থাকলেই পরিবহণ জগৎ হুশিয়অর হবে, বেচে যাবে নিরীহ যাত্রী ও পথচারীদের জীবন, মৃত্যুর পথে যাত্রীদের লাইন দীর্ঘ না হয়ে পরিসমাপ্তির দিকে এগুবে। (চলবে)
লেখক
সাবেক চেয়ারম্যান, বিআরটিসি