দর্জি থেকে কোটিপতি শ্যামলের প্রতি কাশিপুরবাসীর ধিক্কার
# সাংবাদিক নেতাদের নিন্দা ॥ প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়ার দাবী
এনগঞ্জনিউজএক্সপ্রেস :
নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার আতংকের নগরী হিসেবে পরিচিত কাশিপুর ইউনিয়নের যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আনিসুর রহমান শ্যামল এমন কোন অপকর্ম নাই যা তার দ্বারা সম্ভব না। নিকটাত্মীয় স্বজন, প্রতিবেশী, দলের সাধারণ সমর্থক ও অনেকের সাথে আলোচনা করে বেড়িয়ে আসে এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য। মাদক ব্যবসা, নগ্ন ব্যবসা, জুয়া, ভ’মিদস্যুতা, ড্রেজার সন্ত্রাসী, মিল্টনসহ খুনের নেপথ্যের মূল হোতা (কারিগর) আনিসুর রহমান শ্যামল ওরফে হাজি শ্যামল মাত্র কয়েক বছর পূর্বেও কাশিপুর স¤্রাট সিনেমা হলের সামনের একটি গার্মেন্টেসের দর্জি শ্রমিক থেকে হঠাৎ কোটি কোটি টাকার মালিক হওয়ার প্রশ্ন করলেই প্রতিবেদককে মামলা করার হুমকিসহ নারায়ণগঞ্জের সাংবাদিকরাও মাদক ব্যবসা করে বলে মন্তব্য করে।
এমন মন্তব্যে নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শরীফউদ্দিন সবুজ ও নারায়ণগঞ্জ সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আফজাল হোসেন পন্টি এমন মন্তব্যে নিন্দা জ্ঞাপন করেন এবং যদি কেউ মাদক পেশার সাথে জড়িত থাকে তবে তাদের ধরিয়ে দেয়ার দাবী জানান । নইলে প্রকাশ্যে ক্ষমা চেয়ে এমন মন্তব্য প্রত্যাহারের দাবীও করেন সাংবাদিক নেতা সবুজ ও পন্টি ।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কাশিপুর ইউনিয়নের খিল মার্কেট এলাকার অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, আনিসুর রহমান শ্যামল ওরফে হাজী শ্যামলের কি করে তা এলাকাবাসীর পাশাপাশি রাজনৈতিক দলের নেতারা খুব ভালো করে জানেন। শান্তি প্রিয় সাধারণ মানুষ পুরো এলাকা অশান্তিতে রূপান্তরিত করার নেপথ্যে অত্যন্ত ধূর্ততার সাথে হাজী শ্যামলসহ আরো কয়েকজনকে দায়ী করেন। কুটু, কোপা ইকবাল (এক সময়ের দর্জি কারিগর শ্যামলের সহকর্মী বর্তমানে মাদক ব্যবসার পাইকারী ডিলার), সুইমসহ আরো কয়েকজন মাদক ব্যবসায়ী দিন রাত ২৪ ঘন্টা প্রকাশ্যেই মাদক ব্যবসা করে যাচ্ছে।
আনিসুর রহমান শ্যামল ওরফে হাজী শ্যামল তার হাজারো অপকর্ম অস্বীকার করলেও গতকাল মঙ্গলবার পত্রিকা ও অনলাইন নিউজ পোর্টালে সংবাদ প্রকাশের পর অনেকেই এমন সংবাদে সাধুবাদ জানান । সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত অনেকের সাথে মুঠোফোনে ও সরাসরি যোগাযোগ করলে সকলেই এক বাক্যেই বলেন,“ এমন কোন অপকর্ম আছে যা শ্যামল করে না ? এক সময় পতিতালয় উচ্ছেদের পর খিল মার্কেটের ঈদগা ও করবস্থানের সামনে বাদলের বাড়ীসহ কয়েকটি বাড়ীতে বাসা ভাড়া নিয়ে পতিতা রেখে কে ব্যবসা করতো ? মিল্টনসহ জোড়া খুনের ঘটনার আগে মিল্টন তার বাহিনী নিয়ে কি শ্লোগান দিতো ? এখনো সরকারী সম্পত্তি বিক্রি করতে কে ড্রেজার স্থাপন করে রেখেছে ?” কাশিপুরের বাচ্চা থেকে বুড়ো পর্যন্ত সকলেই জানেন হাজী শ্যামলের ব্যবসা কি ? কি দিয়ে দর্জি থেকে কোটি কোটি টাকার মালিক বনেছে ? এই ঘৃন্য ব্যক্তি টাকার জন্য সকল ধরণের অপকর্মই করে শ্যামল । সারাদেশের ন্যায় নারায়ণগঞ্জের কাশিপুরে মাদকের এই বিশাল ব্যবসার নেপথ্যের শেল্টারদাতাকে গোপনে ও প্রকাশ্যে তদন্ত করে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে র‌্যাব ও পুলিশের প্রতি দাবীও জানান অনেকেই। এমন অসংখ্য এলাকাবাসীর মন্তব্য রেকর্ড রাখার পর সকলেই করজোড়ে বলেন, ভাই শ্যামল ও তার বাহিনী এতটাই ধূর্ত যে কোন উপয়েই হোক আমাদের নাম প্রকাশ হলে বিশাল ক্ষতি করবে । যেমন বিএনপির নেতা মজিদ ও হাসানের সাথে জমি ভ’মিদস্যুতার কারণে শ্যামলের দ্বন্ধ ছিলো পুরানো। সেই পুরানো জিদ মিটাতে মজিদ ও হাসানের এক সময়ের সন্ত্রাসী মিল্টনকে নিজের কব্জায় নিয়ে জোড়া খুনের ঘটনা ঘটিয়ে এখন শ্যামল প্রতিপক্ষদের নিয়ে চিন্তামূক্ত। শ্যামল প্রায়ই নিজেদের মাঝে দম্ভ নিয়ে একটা শ্লোক বলে থাকে তা হলো ঃ “শত্রু মারমু, চল্লিশা খামু, যদি শত্রু বাইচ্চা যায়, তবে দুধ কলা নিয়া দেখতে যামু।” এমন শ্লোকের অর্থটা একটু চিন্তা করলেই সহজে যে কেউ অনুধাবন করতে পারবে শ্যামল কতটা ধূর্ত ।
কাশিপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক দর্জি থেকে হঠাৎ কোটিপতি আনিসুর রহমান শ্যামল ওরফে হাজি শ্যামল নারায়ণগঞ্জের সাংবাদিকরা মাদক ব্যবসায়ী বলে মন্তব্য করায় নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শরীফদ্দিন সবুজ তার প্রতিক্রিয়ায় বলেন, শ্যামলের এমন মন্তব্য গ্রহণযোগ্য না। সাংবাদিকরা এখনো আস্থার স্থান হিসেবে পরিচিত । যদি শ্যামল সজ্ঞানে মন্তব্য করে তবে তা অত্যান্ত নিন্দনীয়।
নারায়ণগঞ্জ সাংবাদিক ইউনয়নের সাধারণ সম্পাদক আফজাল হোসেন পন্টি আরো জানান, সারা দেশের মাদক বিরোধী অভিযান চলছে । এই সময়ে যদি কোন সাংবাদিক মাদক ব্যবসা করে বলে শ্যামলের জানা থাকে তবে পুলিশকে জানানোর আহবান জানাবো। নইলে প্রমাণ না করতে পারলে শ্যামলকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়ার আহবান জানাবো । আর আনিসুর রহমান শ্যামলের এমন মন্তব্যে কঠোরভাবে নিন্দা জানাই ।